পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া আমরা এক মুহূর্তও চলতে পারি না। থালাবাসন মাজা, কাপড় কাচা থেকে শুরু করে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি কাজেই পানি অপরিহার্য। তবে এসব কাজে শুধু পানি ব্যবহার করলেই চলবে না, চাই বিশুদ্ধ পানি। এক্ষেত্রে সুস্থতায় পানি ফুটিয়ে পান করার বিকল্প নেই। পানি ফুটিয়ে পান করলে শরীরের কোন ক্ষতি হয় না। কিন্তু আপনি জানেন কী, পানি অতিরিক্ত কিংবা বারে বারে ফুটালেই বিপদ? এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বার বার যদি পানি ফুটানো হয় তাহলে এতে আর্সেনিক, নাইট্রেটস এবং ফ্লরোইডের মতো ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা বাড়তে থাকে, যা ধীরে ধীরে শরীরকে ভিতর থেকে ঝাঁঝরা করে দেয়। ফলে আয়ু তো কমেই, সেই সঙ্গে বেঁচে থাকাটাই দুর্বিসহ হয়ে ওঠে।
পানি গরম করার সময় তার চরিত্র বদলে যেতে থাকে। সেইসঙ্গে এতে দ্রবিভূত হাজারো ক্ষতিকর উপাদান নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণেই শরীরকে সুস্থ রাখতে বাচ্চা এবং বয়স্কদের ফুটানো পানি পান করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরাও। কিন্তু যখনই একবার ফুটিয়ে নেওয়া পানি পুনরায় আঁচে চাপানো হয়, বিপদটা তখনই। দ্বিতীয়বার তা গরম করার সময় এতে নানা কারণে ক্ষতিকর কেমিক্যালের মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে শরীরের নানা ক্ষতি হয়।
চিকিৎসকরা আরও বলেন, পানিতে অনেক খনিজও দ্রবিভূত থাকে, যা আমাদের শরীরে গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কিন্তু বারে বারে যদি পানি ফুটানো হয়, তাহলে এক সময়ে গিয়ে উপকারী উপাদানগুলোই ক্ষতিকর কম্পাউন্ডে বদলে গিয়ে শরীরের ক্ষতি করে। যেমন, ক্যালসিয়ামের কথাই ধরুন না। পানিকে একাধিকবার ফোটালে ক্যালসিয়ামের চরিত্র বদলে যায়, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র গল ব্লাডার এবং কিডনিতে স্টোন হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
এখানেই শেষ নয়, বহু বার ফুটানো পানির কারণে শরীরের আরও বেশ কিছু ক্ষতি হয়ে থাকে। যেমন-
××আর্সেনিকের মাত্রা বৃদ্ধি পায়
ধরুণ, আপনি যে পানি পান করছেন তাতে যে পরিমাণ আর্সেনিক আছে, তা স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যেই আছে। ফলে এই পরিমাণ আর্সেনিক শরীরে প্রবেশ করলে কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু সেই পানিটা যদি বারে বারে গরম করা হয়, তাহলে আর্সেনিকের পরিমাণ আর স্বাভাবিক থাকে না, বাড়তে শুরু করে। আর অধিক মাত্রায় এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করলে আর্সেনিক টক্সিসিটি, পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি, পেটের সমস্যা, স্কিন ডিজজ, রেনাল ফলিওর, হার্টের অসুখ এবং ক্যান্সারের মতো মরণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
××নাইট্রেটস
পানি, মাটি এবং বাতাসে ভেসে বেরাচ্ছে নাইট্রেটস নামের উপাদানটি। কিন্তু তবুও আমাদের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। কেন জানেন? কারণ এই নাইট্রেটস যতক্ষণ না উচ্চ তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসছে, ততক্ষণ কোন ক্ষতিসাধনই করে না। তাই তো পানিকে বারে বারে ফুটাতে নিষেধ করেছেন চিকিৎসকরা। কারণ এমনটা করলে পানিতে উপস্থিত নাইট্রেটস তার চরিত্র বদলে নাইট্রোস্য়ামিনিস নামে একটি উপাদানে রূপান্তরিত হয়, যা কার্সিনোজেনিক। অর্থাৎ এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এছাড়াও লিউকেমিয়া এবং নন-হচকিন লিম্ফোমার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
××ফ্লরোইড
একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যে পানিতে ফ্লুরোইডের উপস্থিতি আছে সেই পানি শরীরের জন্য একেবারেই ভালো নয়। প্রায় ২২ বছর ধরে চলা এক গবেষণার পর জানা গেছে, পানিকে বারে বারে ফুটিয়ে পান করলে তাতে দ্রবিভূত ফ্লরোইড ব্রেনের ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমিয়ে দেয়। ফলে বুদ্ধি, মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি সবই কমতে শুরু করে। এ কারণেই বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফুটিয়ে পানি পান করা ভালো, কিন্তু বেশি ফুটিয়ে পানি পান মানে মৃত্যুকে আমন্ত্রণ জানানো। তাই আগে থেকেই সাবধান হোন, জীবন বাঁচান।
Contact :
Name : Mahmud Abir (CEO)
Number: 01632116385 / 01780408163
Facebook: Our Page

No comments: